ঐতিহ্যবাহী বন্দরনগরী নারায়ণগঞ্জ শহরে সর্বপ্রথম যে ব্যক্তিটি ইংলিশ মিডিয়াম স্কুলের প্রয়োজনীতা অনুভব করেন তিনি হচ্ছেন নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুলের প্রতিষ্ঠাতা জনাব ডা. এ ডব্লিউ এফ রহমান, যিনি ক্যাপ্টেন রহমান নামে বেশি পরিচিত। তারই উদ্যোগে সাড়া দেয় তৎকালীন আদমজী জুট মিল কর্তৃপক্ষ। সেই লক্ষ্যে প্রথম সভাটি অনুষ্ঠিত হয় ২৫.০২.১৯৫৫ সালে নারায়ণগঞ্জ ইনস্টিটিউটে। যেখানে সভাপতি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন তৎকালীন ঢাকার বিজ্ঞ জেলা ম্যাজিস্ট্রেট এম ই খাদ চৌধুরী (তাছাড়াও নারায়ণগঞ্জ মহাকুমা প্রশাসক, সরকারি উর্ধ্বতন কর্মকর্তাগণ, শুভাকাঙ্ক্ষী ও শহরের অনেক ব্যক্তিবর্গ উপস্থিত ছিলেন। সভায় একটি পরিচালনা কমিটির সিদ্ধান্ত ঘোষণা করা হয় এবং ১০২ ডিলায়েল রোডস্থ (তৎকালীন পাক বে-এর উল্টো দিকের অফিস) টি.আর, ও অফিসটিতে স্কুলের অস্থায়ী কার্যক্রম শুরু হয়। পরে আদমজী কর্তৃপক্ষ তাদের তৎকালীন কায়েদ-এ আজম রোডস্থ অফিস ভবনটি স্কুল কর্তৃপক্ষের নিকট সম্প্রদান করেন। ১ জুন ১৯৫৫ তে কিছুটা মেরামতের পর স্থায়ীভাবে স্কুলের কার্যক্রম এঐ ভবনে শুরু হয়। তখন পরিচালনা কমিটির সভাপতি ছিলেন এ এম এফ হক, মহাকুমা প্রশাসক (SDO), (পদাধিকার বলে) এবং প্রধান শিক্ষিকা ছিলেন মিসেস পি হার্বার্ড (১৯৫৫-১৯৬৪)। তারপর আয়েশা জালাল আহমেদ ১৯৬৪ সাল থেকে ১৯৬৮ সাল পর্যন্ত ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষিকা এবং০১/০৯/১৯৬৮ খ্রি. থেকে ১১/১২/২০১১ খ্রি. পর্যন্ত পূর্নাঙ্গ প্রধান শিক্ষিকা হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন। ০৩/০৬/২০১২ খ্রি. থেকে ৩১/১১/২০২১ খ্রি. পর্যন্ত প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করেন এম এ আব্দুল বারী। ১৬/১১/২০২১ খ্রি. থেকে বর্তমানে প্রধান শিক্ষকের দায়িত্ব পালন করছেন আব্দুর রাজ্জাক।
- ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধের সময় স্কুলটির অনেক ক্ষয়ক্ষতি হয় এবং অবাঙ্গালী ছাত্র/শিক্ষক সবাই চলে গেলে স্কুলের শিক্ষিকা ও ছাত্র সংখ্যা দাঁড়ায় যথাক্রমে ৪ ও ৪০-এ, যা অগে ছিল ১৬ এবং ৪০০। ১৯৭৩ সালে সরকারী নির্দেশে নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী ইংলিশ স্কুল নামটি থেকে ইংলিশ শব্দটি বাদ দিয়ে নারায়ণগঞ্জ প্রিপারেটরী স্কুল নাম করণ করা হয়। শুরু থেকে স্কুলটিতে শিশু থেকে ৬ষ্ঠ শ্রেণি পর্যন্ত ছিল। ১৯৭৯ সাল
হতে নিয়মিত সরকারি বৃত্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করছে। বর্তমানে এখানে বাংলা মাধ্যম ও দশম শ্রেণি পর্যন্ত পাঠদান করা হয়।
- ছলের পুরাতন ভবনটি জরাজীর্ণ হওয়ায় এবং ছাত্র সংকুলান না হওয়ার কারণে স্কুলটির দক্ষিণ-পূর্ব পাশের এক বিঘা চার শতক (৩৪ শতাংশ) পুকুরটি সম্পূর্ণ নিজস্ব তহবিল থেকে ভরাট করে সেখানে পাঁচতলা ফাউন্ডেশন দিয়ে চার তলা পর্যন্ত নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করা হয়।
- বিগত বছর যাবত স্কুলটিতে নিয়মিত বার্ষিক ক্রীড়া প্রতিযোগিতা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও পুরস্কার বিতরণী অনুষ্ঠানাদি বৃহৎ পরিসরে আয়োজিত হয়ে আসছে। অবশেষে উল্লেখ্য যে, কোনরকম সরকারি-বেসরকারী অনুদান ছাড়াই সম্পূর্ণ নিজস্ব আয়ে স্কুলটি যথাযথভাবে পরিচালিত হচ্ছে।